সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ঐক্য না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একাধিক বিকল্প প্রস্তাব যাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
দলগুলো একমত না হলে একাধিক প্রস্তাব দেবে ঐকমত্য কমিশন: ড. আলী রীয়াজ
- আপডেট সময় : ০১:৫৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
- / 102
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হতে পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একাধিক প্রস্তাব পেশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংলাপের চতুর্থ দিনে এই ঘোষণা দেন কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
তিনি জানান, সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাব এসেছে। কমিশন চায়, আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে এই প্রস্তাবগুলোকে একত্রিত করে একটি অভিন্ন রূপরেখা তৈরি হোক। কিন্তু যদি ৩০টি দলের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তবে একাধিক প্রস্তাবই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

ড. রীয়াজ বলেন,
> “আমরা আশা করছি দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাবে। কিন্তু যদি তা না হয়, তবুও বাস্তবায়নের গতি থেমে থাকবে না। প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো আমরা সরকারকে একাধিক বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করব।”
তিনি আরও জানান, ১৬ সেপ্টেম্বরের আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যারা প্রক্রিয়াটি সহজতর করার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা সম্পর্কে আলী রীয়াজ বলেন,
> “প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিতে বলেছেন। সনদ বাস্তবায়নকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে তা সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।”
তিনি জানান, কমিশনের মেয়াদ ১৫ অক্টোবর শেষ হওয়ার আগেই প্রক্রিয়াটি শেষ করতে তারা সচেষ্ট। নির্বাচনী ব্যস্ততা ও দলীয় কর্মসূচির মধ্যেও যেন এই সংলাপ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়েও কমিশন সচেতন।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. রীয়াজ বলেন,
> “দলীয় বিবেচনা নয়, জাতীয় স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করুন। যদি ৩০টি দল একটি অভিন্ন প্রস্তাব দিতে পারে, তাহলে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পুনরায় বসার প্রয়োজন দেখব না।”
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ তাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছে। সেই স্বপ্ন পূরণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য অপরিহার্য।
> “১৬ বছর ধরে আপনারা নানা দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন, অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। সেই ত্যাগের মর্যাদা দিতে হলে আমাদের সংস্কারমূলক পথে অগ্রসর হতে হবে।”
সংলাপে কমিশনের অন্যান্য সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার।
ড. রীয়াজের বক্তব্যে একদিকে যেমন রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার বার্তা উঠে এসেছে, তেমনি কমিশনের বাস্তববাদী মনোভাবও স্পষ্ট হয়েছে—যদি ঐকমত্য না হয়, তবুও দেশের স্বার্থে প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না।













