নারীদের ওপর কোনো কিছু জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগের জুলুমের শিকার হয়েছে দেশের ১৮ কোটি মানুষ। তাদের দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে নিজেদের দলের অনেক নেতা-কর্মীও। গত সাড়ে ১৫ বছরে তারা লুটপাট, দখল, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গণহত্যা চালিয়েছে। এমনকি মায়ের কোলে থাকা দেড় মাসের শিশুও তাদের থেকে রেহাই পায়নি। আওয়ামী লীগ শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র বা সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়। ২০০৮ সালে প্রশ্নবিদ্ধ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। তারা ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালে রাতের ভোট, এবং ২০২৪ সালে ডামি ভোট দিয়ে জনগণের সাথে তামাশা করেছে। তাদের নির্বাচনগুলো গণতন্ত্রের নামে প্রহসন। আওয়ামী লীগ যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হতো, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতো। যারা আজ আওয়ামী লীগকে ভোটে আসার কথা বলে, তাদের বলবো, আগে আওয়ামী লীগকে মানুষ হতে হবে, তারপর জনগণ ঠিক করবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না।”

আওয়ামী লীগের অপরাধ নিয়ে বক্তব্য

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, “আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য ছিল আলেমদের হত্যা করে বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করা। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের আলেমদের হত্যা এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির মাধ্যমে অসংখ্য আলেম-ওলামা ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে ১৪টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলো জনগণের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বরং এসব ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে ইসলামী ব্যাংককে পুনরায় অর্থনীতির মেরুদণ্ডে পরিণত করবে এবং সাধারণ মানুষের জন্য এই ব্যাংককে গড়ে তুলবে।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনগণের প্রতি আহ্বান

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনগণের উদ্দেশ্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “যারা অতীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের জনগণের ভোট চুরি করেছে, তারা জনগণের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে। আগামীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের দায়িত্ব পেলে জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। এই সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না। প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে তার প্রাপ্য অধিকার ভোগ করবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।”

রুকন সম্মেলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুজার গিফারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চলের জোন পরিচালক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চলের সহকারী জোন পরিচালক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মশিউর রহমান এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর প্রমুখ।

আরো পড়ুন