সংবিধানের মর্যাদা রক্ষায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের
ইসি বলল, কোনো দলই পাবে না জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক
- আপডেট সময় : ০৯:১৫:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
- / 92
নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দলকে জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্তের ফলে শাপলা প্রতীকটি সংরক্ষিত জাতীয় প্রতীক হিসেবেই থাকবে।
ইসি সূত্র জানায়, জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলার ব্যবহার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে জড়িত। কোনো রাজনৈতিক দলকে এই প্রতীক দেওয়া হলে তা সাংবিধানিক জটিলতা ও আইনি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
কমিশনের একজন সদস্য জানান, “জাতীয় ফুল শাপলা যদি কোনো দলকে দেওয়া হয়, তবে তা রাষ্ট্রের প্রতীকের মর্যাদা নষ্ট করবে। নির্বাচনী পোস্টার বা প্রচারণায় শাপলা ব্যবহারে এটি অসম্মানজনক অবস্থায় পড়বে, যা অনুচিত।”

ইসি ব্যাখ্যায় বলেছে, সংবিধানের ৪(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হলো শাপলা। একই সঙ্গে ৪(৪) অনুচ্ছেদে জাতীয় প্রতীক ও পতাকার অননুমোদিত ব্যবহার অপরাধ বলে উল্লেখ আছে। বর্তমানে শাপলা ব্যবহৃত হচ্ছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে, সংসদ ভবনে, এনআইডি কার্ডে, পাসপোর্টে এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের লোগোতে।
ইসি বলছে, কোনো দলকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিলে তিনটি বড় সমস্যা দেখা দেবে—
১️⃣ নাগরিক পরিচয়পত্রে ব্যবহৃত প্রতীক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।
২️⃣ রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
৩️⃣ ভোটারদের মনে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হবে।
এ কারণে ইসি মনে করছে, শাপলাকে রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা সংবিধানের ন্যায়সংগত নির্বাচন নীতির পরিপন্থী।
এর আগে, নিবন্ধনপ্রাপ্ত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শাপলা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছিল। কিন্তু ইসি তা নাকচ করে দেয়। এনসিপির নেতারা এই সিদ্ধান্তকে “রাজনৈতিক অনিচ্ছা” হিসেবে দেখলেও, কমিশন বলছে—এটি সম্পূর্ণ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত।
কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “জাতীয় ফুলের মর্যাদা রক্ষায় আমরা আপসহীন। এটি রাষ্ট্রের পরিচয়ের প্রতীক, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়।”
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করেছে, ভবিষ্যতেও কোনো দলকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে না।















