সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির জন্য শিক্ষা
- আপডেট সময় : ০৫:৩৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
- / 100
নেলসন ম্যান্ডেলা বলতেন “আমি কখনও হারি না; আমি হয় জিতি, নয়তো শিক্ষা নেই” সাম্প্রতি ছাত্রদলের জয় পরাজয়ের সেই শিক্ষায় যাবার আগে ঢাকাও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু/জাকসু) নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে কিছুটা পর্যালোচনা করা যাক। বলা দরাকার, অন্তত দশ থেকে বারোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ যেটা পূর্বে “ছাত্র রাজনীতির সংকট ও উত্তরণের পথ” শিরুনামে যুগান্তরে প্রকাশিত উপ সম্পাদকীয়তে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি।
যাইহোক, ডাকসু/জাকসু বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির যেমন কেন্দ্রবিন্দু তেমনি জাতীয় রাজনীতির সূতিকাগার বললেও অত্যুক্তি হবে না। দীর্ঘ বিরতির পর যে সময় ডাকসু/জাকসু নির্বাচন পুনরায় আয়োজিত হল, তা শুধু ক্যাম্পাস রাজনীতির জন্যই নয়, সমগ্র দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্যও এক পরীক্ষা-ক্ষেত্র হয়ে ওঠেছিল। এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ছাত্রশিবির, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন এনসিপির ভাতৃপ্রতিম সংগঠন বাগছাস, বাম এবং স্বতন্ত্র প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সতন্ত্র সহ প্যানেলগুলোর প্রচার-প্রচারণা, বয়ান-প্রতিবয়ান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় কর্মীদের ভূমিকা, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, ভোটগ্রহণ ও ফলাফল সহ সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় জটিল এক রাজনৈতিক বাস্তবতা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ব-পরবর্তী রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গৌরবজ্জ্বল। ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন, কোটা বিরোধী আন্দোল্ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্ররা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ তিন দশক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্ররাজনীতি ধীরে ধীরে ক্যাম্পাস-ভিত্তিক শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়ে গোষ্ঠী কেন্দ্রিক রাজনীতির দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। ফলে নির্বাচনের পুনরারম্ভে অনেকের কাছেই এটি ছিলো ‘রিস্টার্ট বাটন’, যেখানে পুরনো গৌরব, প্রশাসনিক সক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রভাব সব ছিল একসাথে পরীক্ষার মুখোমুখি।

কিছু বিতর্ক বাদ দিলে সাম্প্রতিক সময়ে ডাকসু এবং জাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের অকল্পনীয় সাফল্য আগামীর জাতীয় রাজনৈতির সমীকরণ নিয়ে নতুন করে ভাববার অবকাশ আছে। এই নির্বাচনগুলোতে সব হিসাব নিকাশ পাল্টে দিয়ে ছাত্রদল প্রতিপক্ষ হিসাবে ছাত্রশিবিরের বিপক্ষে উল্লেখযোগ্য কোন প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে। ছাত্রদলের এই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে প্রথমেই বলতে হয় প্রচার-প্রচারণার প্রধান অস্ত্র ইশতেহার। ছাত্র শিবিরের ইশতেহার ছিল অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, শিক্ষার্থীবান্ধব এবং গবেষণালব্ধ। তারা ১২ মাসে ৩৬টি সংস্কারের টার্গেট নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করে। শিবিরের প্যানেলটি ছয়টি মৌলিক দাবি-দাওয়ায়কে হ্যাঁ বা ইতিবাচক হিসাবে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে যার মধ্যেঃ নিরাপদ ক্যাম্পাস, আবাসন সংকটের সমাধান, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সুবিধা ও স্বাস্থ্যকর খাবার, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা এবং ক্যারিয়ার গঠনে পর্যাপ্ত সেবা।
অন্যদিকে তারা দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেছে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি, নির্যাতন ও সহিংসতা, গণরুম-গেস্টরুম কালচার, বৈষম্যমূলক নীতি, মাদক-ছিনতাই-চাঁদাবাজি, ‘লাঞ্চের পরে আসেন’ কালচার, ইসলামোফোবিয়া ও সাইবার বুলিং-এর। শিক্ষা ও গবেষণা সংস্কার বিষয়ে ইশতেহারে বলা হয়েছে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য বৈধ সিট নিশ্চিত করা, গবেষণায় ছোট অনুদান, ভ্রমণ অনুদান, নিয়মিত সেমিনার-ওয়ার্কশপ আয়োজন এবং গবেষণাগারে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। লাইব্রেরি সম্প্রসারণ ও ডিজিটালাইজেশন, ই-লাইব্রেরি ও কম্পিউটার সেন্টার, বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে।
আবাসন, খাদ্য ও পরিবহন সম্পর্কে তারা শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হোস্টেল ও মাসিক ভাতার প্রস্তাব করা হয়েছে, আর দীর্ঘমেয়াদে নতুন হল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ক্যান্টিনে পুষ্টিবিদের মাধ্যমে মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহ, নিয়মিত খাবারের মান পরীক্ষা, আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য মিল ভাউচার চালুর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন বাস ক্রয়, রুট ও ট্রিপ বৃদ্ধি, মোবাইল অ্যাপে রিয়েলটাইম ট্র্যাকিং, শাটল সার্ভিস চালুর কথা বলা হয়েছে।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিশ্চিত করতে নারী কর্মচারী ও প্রক্টরিয়াল সদস্য নিয়োগ, ছাত্রী হলে বিধি-নিষেধ শিথিল, অভিভাবকদের জন্য গার্ডিয়ান লাউঞ্জ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ক্লাসে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শিথিল, ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও চাইল্ড কেয়ার কর্নার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি, ফ্রি মেন্সট্রুয়াল হাইজিন প্রোডাক্ট এবং সেলফ-ডিফেন্স প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতিও ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত।
স্বাস্থ্য, কল্যাণ ও মানসিক সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার আধুনিকীকরণ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, নারী চিকিৎসক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ, DUMC অ্যাপ চালু করা, সারাদেশের হাসপাতালের সঙ্গে MoU করে চিকিৎসায় ছাড় ও স্বাস্থ্যবীমার ঝামেলা নিরসনের পরিকল্পনা আছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং বিস্তারের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তি চালুর প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পরিবেশ উন্নয়নে তারা অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা, টিএসসি ও উপাসনালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়াক্ষেত্রে আধুনিক সুবিধা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্রীড়া আয়োজন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করা ও নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসকে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও শব্দদূষণমুক্ত রাখার জন্য নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে পেপারলেস সিস্টেম চালু, ডাকসু ওয়েবসাইট ও অ্যাপ আধুনিকীকরণ, শিক্ষক মূল্যায়ন ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম চালু, আইনি সহায়তা ডেন্ট স্থাপন, গ্রিভেন্স রেসপন্স টিম ও ভিক্টিম সাপোর্ট সেল গঠন, কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব। বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, ভাসমান হকার উচ্ছেদ এবং নিবন্ধিত রিকশা প্রবর্তনের পরিকল্পনাও এতে রয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্রদলের প্রচার-প্রচারণের হাতিয়ার ছিল অত্যন্ত সাদামাঠা খুবই নিম্নমানের। দশ দফা ইশতেহারের বিবেচ্য বিষয়গুলো ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইশতেহারে শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়কে আনন্দময়, শিক্ষণীয় ও স্মরণীয় করে তুলতে নানা সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
নারী শিক্ষার্থীদের পোশাকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স ও ফার্মেসি সেবা নিশ্চিত করা এবং জরুরি ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কোর্স কারিকুলামকে আধুনিক বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে শিক্ষক, ছাত্র ও বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে পরিবেশবান্ধব ব্যাটারিচালিত পর্যাপ্ত শাটল সার্ভিস চালুর পাশাপাশি রেজিস্ট্রার ভবনকে হয়রানিমুক্ত ও আধুনিক করতে প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ধাপে ধাপে ডিজিটালাইজড করার ঘোষণা।
এছাড়া বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাঙ্গন গড়ে তুলতে নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চাকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে। একাডেমিক ইমেইলের স্টোরেজ লিমিট বৃদ্ধি, মেয়াদ বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক জার্নাল ও অনলাইন লাইব্রেরি এক্সেস এবং বিনামূল্যে ক্লাউড স্টোরেজ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজায়ন এবং প্রাণিবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষে, একাডেমিক ক্যালেন্ডারে নিয়মিত ডাকসু নির্বাচনকে অন্তর্ভুক্ত করে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রাতিষ্ঠানিক করার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
উভয় ইশতেহারের তুলনামূলক বিচার করলে দেখা যায় অন্তত ৫ পাঁচটি দফা ছাত্রদল শিবিরের সাথে হুবহু মিলে যায়। ছাত্রদলের বাকি কয়েকটি দফা ছিল সুপারফিসিয়াল এবং কাব্যিক যেটা দিয়ে আসলে ভোটের মাঠে শিক্ষার্থীদের মন জয় করা সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ, ইশতিহারের প্রথম দফতে বলা হয়েছে “শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়কে আনন্দময়, শিক্ষণীয় ও স্মরণীয় করে তুলতে নানা সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার”। এটা কোন সমস্যা-কেন্দ্রিক বা টাস্ক বেসড নয়। শিক্ষার্থীরা এই দফা থেকে কি আশা করবে সেটা অপরিষ্কার। যাইহোক, আমরা বিশ্বাস করতে চাই উভয়ের ইশতেহার প্রণয়নে কেন্দ্রীয় অভিজ্ঞ বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ ছিল। সেই ক্ষেত্রে বিএনপি’র বুদ্ধিজীবীদের ব্যর্থতা স্পষ্ট প্রতীয়মান। সুতরাং বিএনপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং গবেষণা সেলের আশু সংস্কার জরুরি বলে মনে করছি।
এবার আসি এই ইশতিহার শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরা এবং তাদের মন জয় করার প্রক্রিয়া নিয়ে। নির্বাচনী রাজনীতিতে ‘বয়ান’ (narrative) হলো জনমত-প্রভাবিত করার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। সেক্ষেত্রে শিবিরের প্রচার ছিল সাধারণত আদর্শিক শৃঙ্খলা, সামাজিক মূল্যবোধ, সুশাসনের প্রতিশ্রুতি এবং জুলাই স্পিরিট কেন্দ্রিক। অবাক করার বিষয় হল, ধর্মভিত্তিক একটি সংগঠন হয়েও তারা ধর্মীয় বয়ান বা নেরেটিভগুলো সেভাবে সামনে আনেনি। তাদের প্যানেলের বৈচিত্রময় প্রার্থীদের দেখলেই সেটা স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। তারা তাদের প্যানেলে সকল ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গের প্রার্থীদের সন্নিবেশ ঘটিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ধেক শিক্ষার্থী নারী আর অন্তত ১৫ থেকে ২০ ভাগ শিক্ষার্থী অমুসলিম এবং অবাঙালি। সেক্ষেত্রে, বৈচিত্র্যময় এই শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধন করতে পারা অবশ্যই ছিল চ্যালেঞ্জিং-তুলনামূলক বিচারে যেটা তারা সুনিপুণভাবেই করতে পেরেছে।
শিবির তাদের ‘নির্যাতিত অথচ শৃঙ্খলাবদ্ধ’ পরিচয়টি নীরবে প্রচার করেছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এই বয়ান-যুদ্ধে যে সমস্যা প্রকট হয় তা হলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন সমস্যার সঙ্গে বয়ানের সেতুবন্ধন।
অন্যদিকে ছাত্রদলের প্রচারণায় ছিল ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার সহ পুরাতন সেই আওয়ামীলীগের বয়ান-স্বাধীনতা, যুদ্ধাপরাধ রাজাকার, পাকিস্তানপন্থী, ইত্যাদি। আমি বলছি না এগুলো একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এখন সময় এসেছে আমরা কি সামনের দিকে এগিয়ে যাব নাকি স্থান কাল পাত্র বিবেচনায় না নিয়েই এই প্রসঙ্গগুলোর পুনরাবৃত্তি করব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই রেটরিক বা বয়ানগুলো ব্যবহার করেই আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ গত ১৭টি বছর এদেশের সকল শ্রেণীর পেশার মানুষকে শোষণ নির্যাতন জুলুম অত্যাচার করে গেছে। সুতরাং এই বয়ান এখন জুলুমের কাল্ট হিসেবে বিবেচিত যা দিয়ে মানুষের মন জয় করার সম্ভব নয়।
অনেকের কাছে আমার এ লেখা দৃষ্টিকটু মনে হলেও বাস্তবতা আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে জেন-জি বা ভবিষ্যৎপ্রজন্ম এখন সামনের দিনে ভবিষ্যৎমুখি রাজনীতিতে বেশি আগ্রহী এবং ফরওয়ার্ড থিংকিং। সুতরাং, প্রতিপক্ষকে ডিফেন্ড করতে নতুন অহিংস, সৃজনশীল বয়ান উৎপাদনের বিকল্প নাই। আসলে প্রচারের ভাষা যদি সর্বজনীন শিক্ষার্থী-স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হয়, তা হলে বয়ান কেবল ‘রাজনৈতিক’ থেকে যায়, ‘ছাত্রস্বার্থের’ ভাষা হয়ে উঠতে পারে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাক্টিভিজম নির্বাচনের ফলকে প্রভাবিত করেছে। বিশেষ করে ছাত্রদলের প্রার্থিদের বিপক্ষে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুএন্সারদের নেতিবাচক প্রচারনা ছিল চোখে পড়ার মত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি এবং ছাত্রদল কেন অনলাইন জগতে প্রভাব বিস্তার করতে পারল না? ছাত্রশিবিরের অপপ্রচার প্রতিহত করতে পারল না। শুধু অভিযোগ দিয়ে বসে থাকা রাজনীতি নয়, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্বপরিকল্পনা এবং সেই অনুসারে বাস্তবায়নের পথে হাঁটা রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিএনপির মিডিয়া উইং এবং আইটি সেক্টরের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া জগতে ব্যক্তিগত রেষারেষি, বাকবিতণ্ডা-অপপ্রচার, ইসলামিক মূল্যবোধকে আঘাত করা সহ বাংলাদেশ এবং জুলাই স্পিরিটকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন বলে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি’র নীতি নির্ধারণী ফোরামের অধিকাংশ সদস্যই বয়োজষ্ঠ্য। সোশ্যাল মিডিয়া এবং আইটি জগত নিয়ে তারা কতটুকু সময় দিতে পারেন বা এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সেটা ভাবার বিষয়। তবে, দায়িত্বপ্রাপ্ত অধীনস্থদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা সময়ের দাবি।
ছাত্রদলের জন্য যে তিনটি ঘাটতি প্রায়শই আলোচনায় আসে (১) প্রতিষ্ঠানগত ধারাবাহিকতা: দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে নিয়মিত উপস্থিতির অভাব, নতুন প্রজন্মের সঙ্গে টেকসই সম্পৃক্ততার ঘাটতি; (২) মাঠ-সংগঠন: ভোটের আগে হল- ভিত্তিক টিম গঠন, ভোটার তালিকা ও বোঝাপড়া, এজেন্ট-প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ার দুর্বলতা; (৩) বার্তার অনুবাদ: হলে সিট প্রাপ্তি, নিরাপত্তা, ল্যাব-অ্যাক্সেস, গবেষণা-ফান্ড, কোর্স-রেজিস্ট্রেশন এসব বাস্তব সমস্যার সমাধান শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপনে অপারগতা। এর সঙ্গে যুক্ত হইয়েছিল, সাংগঠনিক বিভাজন, কেন্দ্রীয় ও ইউনিট পর্যায়ে আস্থাহীনতা, লেজুড়বৃত্তিক গ্রুপিং ইত্যাদি। অন্যদিকে ফাস্যিবাদ আমলেও ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এবং অনেক ক্ষেত্রে তাদের পদধারী হয়েও গুপ্তভাবে হলেও তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম মোটামুটি মসৃণভাবেই চালিয়ে যেতে পেরেছে। সেই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের আগে থেকেই বোঝাপড়া ছিল ছাত্রদলের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি হাতেগোনা কিছু প্রার্থী বাদ দিলে উভয় দলের প্রার্থীদের যোগ্যতায় তেমন কোন পার্থক্য ছিল না। অধিকাংশ প্রার্থীই অবদান রেখেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। কিন্তু, পার্থক্য করে দিয়েছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, বাস্তবায়নের পথ, রাজনৈতিক বয়ান, মিডিয়া সংযোগ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং অতিত ইতিহাস। এগুলোর প্রতিটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিবির ছিল যতটা সফল, ছাত্রদল ছিল ততটাই ব্যর্থ। তবে বলা দরকার, বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি যেহেতু জাতীয় রাজনীতির অংশ, সেহেতু ছাত্রদলের প্রার্থীদেরকে এককভাবে ব্যর্থতার দায় দেওয়ার সুযোগ নেই। বরং এই দায় অনেকটা তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কেন্দ্রীয় দলের উপরই বর্তায়। বিশেষ করে ৫ ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠনের ব্যাপক হারে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সহিংসতা, অন্তর্কোন্দল দেশব্যাপী জনসাধারনের মতই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। যদিও এই সকল অপকর্মে জামাত-শিবির এবং নতুন দল এনসিপি কম যায়নি, তথাপি মিডিয়া ট্রায়াল, এবং শিবিরের কথিত বট বাহিনির অপপ্রচারের কারণে বিএনপি সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জন্য সবিনয়ে কিছু অনুরধঃ
পলিসি মেকিং এ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা জাতীয়তাবাদী আদর্শের বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন- বিশেষ করে তরুন গবেষকদের। বিএনপি’র পলিসি মেকিংএ দুর্বলতাগুলো দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। বিএনপির রাজনৈতিক বয়ান সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। নেতা কর্মীদের বিএনপির রাজনৈতিক দীক্ষা আত্মস্থ করণ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করুন। অহেতুক, বড় বড় স্লোগান, সভা, সেমিনার সোডাউন করে অযথা মানুষকে হয়রানি বন্ধকরণের যথাযথ নির্দেশনা ও পদক্ষেপ প্রদান করুন।
আমার উপলব্ধি হচ্ছে হচ্ছে বিএনপি’র অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে মাঠ কর্মী পর্যন্ত তারেক রহমানের কথা শুধু “কথার কথা” মনে করেই শুনে যাচ্ছে। বাস্তবে উপলব্ধি করেছেন না। জনাব তারেক রহমান অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম দিন থেকেই বলে আসছেন আগামী নির্বাচন কোনভাবেই সহজ হবে না। উনি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন আত্মতৃপ্তিতে ভোগর কোনো সুযোগ নেই। বিএনপিকে যত বড়ই দলই মনে করুন না কেন জনগণের মন জয় করতে না পারলে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও জনগণ আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করবে। অথচ সারা দেশে বিএনপির বহু নেতাকর্মী যেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রিপ্লেসমেন্ট হিসাবে কাজ করছে- এই বাস্তবতা অস্বীকার করবার সুযোগ নেই। আমি বলছি না জামাত শিবির, এনসিপি অথবা অন্যান্য দল এ ধরনের ঘৃণ্য অপকর্মে জড়িত নয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি’র সংশ্লিষ্টতার প্রচার অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি- সেটাও বিএনপির এক ধরনের ব্যার্থতা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৩০০ আসনের ভিতরে অন্তত ১৫% বা ৪৫ টি আসন জেন-জি জেনারেশন যাদের বয়স ৩০-৪০ এর ঘরে তাদেরকে দিন। ঠিক তেমনি ভাবে ৪০ থেকে ৫০ এর ভিতরে যাদের বয়স তাদের থেকে অন্তত ২৫%, ৫০ থেকে ৬০% এর ঘরে যাদের বয়স তাদের থেকে ২৫% মনোনয়ন দিন, আর বাকি ৩৫% সিনিয়র নেতাদের ভিতর থেকে। আমি বলছি না এই পার্সেনটেজই ফলো করতে হবে তবে একটা ক্রাইটেরিয়া সেট করা সময়ের দাবি। সাথে সাথে উচ্চকক্ষে অন্তত ২৫ পার্সেন্ট প্রার্থীকে পঞ্চাশ বা তার নিচের বয়সীদের মনোনয়ন দিন। বাকি ৭৫ শতাংশ সিনিয়র নেতাদের থেকে নেওয়া যেতে পারে। সমাজের সব শ্রেণির পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করুন। বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী লোকজনকে অগ্রাধিকার দিন। তবে সবার আগে প্রয়োজন তাদের সততার পরীক্ষা নেওয়া, কারন দুর্জন বিদ্যান হলেও পরিত্যাজ্য। মনোনয়নের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বড় বড় মিছিল আর শো-ডাউনধারী নেতাদের বিবেচনায় না নিয়ে বরং সৎ, উচ্চশিক্ষিত, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার সৃজনশীল ব্যক্তিত্বকে প্রাধান্য দেয়া যেতে পারে। বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরিখে বলছি ওই সমস্ত নেতাদের একটা মিছিলে যদি ১০ হাজার লোক হয়, সেখান থেকে অন্তত ৫০% আছে আওয়ামলীগের বা অন্যান্য দলের ভোট। বাকি আড়াই হাজার আছে ভোটারবিহীন বা অপ্রাপ্তবয়স্ক। মিছিলে উপস্থিত এই অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট বিএনপির বাক্সে পড়বে না। এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই বিএনপির উচিত পরিকল্পনা প্রণয়ন। মনোনয়ন প্রার্থীদেরকে ভাইবা বোর্ডে হাজার হাজার লোক নিয়ে মিছিল মিটিং সভা-সমাবেশ করাতে অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা উচিত। আসলে বাস্তবতা হচ্ছে অর্থের যোগান থাকলে এই ধরনের মিছিল মিটিং করা কোন ব্যাপারই না। দুঃখজনক হলেও সত্য যারা এগুলো করছে তাদের বেশিরভাগই ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় বিভিন্ন অনিয়ম করে অর্থ উপার্জন করছে।
চাঁদাবাজি দখলবাজির সাথে জড়িতদের শুধু মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত নয় বরং দল থেকে বহিষ্কার করুন। বিএনপির রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চাঁদাবাজ আর দখলবাজদের দৌরাত্ম। সুতরাং এদেরকে প্রতিহত না করে বরং মনোনয়ন দিলে বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত।
দলকে শক্তিশালী করতে দেশব্যাপী বিএনপি’র কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখাই শ্রেয়। কারণ এখান প্রতিটি আসনে বিএনপির অন্তত তিন থেকে চারজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী-বড় দল হিসাবে সেটা থাক্তেই পারে। তবে কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে অধিকাংশ প্রার্থীই তাদের আধিপত্য বিস্তারে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে, কারণ যে যত বেশি লোক সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে তার গ্রুপ তত বেশি শক্তিশালী হবে। মাঠের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দেশব্যাপী ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠনে তারেক রহমানের নির্দেশনা ন্যূনতম অনুসরণ করা হচ্ছে না। এই প্রক্রিয়ায় ব্যাপক হারে অবৈধ আর্থিক লেনদেন হচ্ছে, প্রতিনিয়ত সংঘাত এবং বিভাজন বেড়েই চলেছে। এটা চলতে থাকলে, বিএনপির কমিটি গঠনের মূল উদ্দেশ বুমেরাং হবে বলেই মনে হচ্ছে।
বিএনপি’র প্রভাবশালী অধিকাংশ প্রার্থীর আশেপাশে এখন আওয়ামী লীগের চিহ্নিত অপরাধী/সন্ত্রাসীরা ঘোরাফেরা করছে। ক্ষেত্রবিশেষে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় তাদের সাথে একিই স্টেজে অবস্থান করছে। অনেক ক্ষেত্রে বিএনপির পদ পদবি বাগিয়েও নিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে এই সমস্ত অপরাধীরা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের হাত ধরে পুনরায় আধিপত্য বিস্তারে লিপ্ত। এই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী।
শেষ কথা হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় রাজনীতিতে কতটা প্রভাব পড়বে সেটা সময়ই বলে দেবে, কিন্তু আগামীর প্রজন্ম ইতিবাচক ধরার রাজনীতি দেখতে চায়। সেই ইতিবাচক ধারার অংশ হিসেবে ছাত্রদলের অনেকেই পরাজয় মেনে নিয়ে একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে, যেটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। দীর্ঘ মেয়াদে এটা তাদের ভবিষ্যতে গৌরবের সাথে ফিরে আসার সম্ভাবনাকে জাগিয়ে রাখলো। দেশ এবং জাতির স্বার্থে বিএনপি’র এখান থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষনীয় পাঠটি হল আগামির রাজনীতি সততা, জবাবদিহিতা, ও সাম্যের, যেখানে অপপ্রচার, অসত্য আর বিদ্বেষকে প্রতিহত করতে দরকার ন্যায়ভিত্তিক সঠিক তথ্য, সচ্ছতা, আর সর্বোপরি ইসলামিক মূল্যবোধের জাতীয়তাবাদ।
লেখক: ড. শাহাবুদ্দিন আহমেদ
সহযোগী অধ্যাপক (এডজ্যাঙ্কট) আইইউবিএটি- ঢাকা
সহকারী অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অফ মালায়া, মালয়েশিয়া

















