বাংলাদেশ ০৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Insaf World Banner

দক্ষতা, ভাষা শিক্ষা ও কৌশলগত প্রস্তুতির ঘাটতিই মূল চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ: জাপানের শ্রমবাজার কতটা প্রস্তুত আমরা?

ইনসাফ বিশ্ব ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 151

ছবি: ইনসাফ বিশ্ব

Insaf World Banner
"ইনসাফ বিশ্ব" পত্রিকার নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সংবাদটি শেয়ার করুন :

এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে জাপানের শ্রমবাজার। দ্রুত বয়স্ক হয়ে যাওয়া দেশের জনসংখ্যা কাঠামো জাপানকে আজ শ্রমশক্তির সংকটে ফেলেছে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে—বাংলাদেশ আসলে কতটা প্রস্তুত এই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে?

Insaf World Banner 1

জাপানের শ্রমিক সংকট: বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনা

জাপান টাইমসের তথ্যমতে, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ কর্মীর ঘাটতি দেখা দেবে। এ শূন্যতা পূরণে দেশটি ইতোমধ্যে বিদেশি শ্রমিক আমদানির পথ সুগম করেছে। বাংলাদেশও এ খাতকে লক্ষ্য করে ২০৩০ সালের মধ্যে এক লাখ কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, নির্মাণ খাতে ৪০ হাজার, কলকারখানায় ২০ হাজার, কেয়ারগিভার ভিসায় ২০ হাজার এবং কৃষি ও গাড়ি সার্ভিসিং খাতে আরও ২০ হাজার কর্মী পাঠানো হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ পথ ধরা হচ্ছে স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) ভিসা।

Insaf World Banner 2

চ্যালেঞ্জের জায়গা কোথায়

তথ্যমতে, ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে জাপানে মাত্র দুই হাজার ৭৪০ জন কর্মী গেছে। অন্যদিকে, নেপাল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একাই ৬০ হাজারের বেশি কর্মী পাঠিয়েছে। পার্থক্যের মূল কারণ—ভাষা শিক্ষা, দক্ষ প্রশিক্ষক ও তথ্যের ঘাটতি।

বাংলাদেশে বিএমইটির আওতায় বর্তমানে ৩৩টি জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তবে দক্ষ শিক্ষক ও আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছেন না। ফলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি পাওয়া অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ভাষা ও সংস্কৃতিই সাফল্যের চাবিকাঠি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানে কাজ করতে হলে প্রথমে জাপানি ভাষা শিখে মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি জাপানি সংস্কৃতি ও কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো জরুরি। দক্ষ প্রশিক্ষক ও মানসম্মত প্রশিক্ষণের ঘাটতি কাটানো না গেলে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সরকারি উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে “জাপান সেল” গঠন করেছে, যারা শ্রমবাজার বিশ্লেষণ, তথ্য সংগ্রহ, ভাষা প্রশিক্ষণ ও জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগেও আবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে, যেখানে সরাসরি জাপানি শিক্ষকেরা প্রশিক্ষণ দেবেন।

কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি হলেও বাস্তবতা হলো—বাংলাদেশকে এখনো অনেকদূর যেতে হবে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও ভাষা শিক্ষার মান উন্নয়নে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল ছাড়া এই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
Insaf World Banner 1
Insaf World Banner 2

দক্ষতা, ভাষা শিক্ষা ও কৌশলগত প্রস্তুতির ঘাটতিই মূল চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ: জাপানের শ্রমবাজার কতটা প্রস্তুত আমরা?

আপডেট সময় : ০৯:০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদটি শেয়ার করুন :

এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে জাপানের শ্রমবাজার। দ্রুত বয়স্ক হয়ে যাওয়া দেশের জনসংখ্যা কাঠামো জাপানকে আজ শ্রমশক্তির সংকটে ফেলেছে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে—বাংলাদেশ আসলে কতটা প্রস্তুত এই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে?

Insaf World Banner 1

জাপানের শ্রমিক সংকট: বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনা

জাপান টাইমসের তথ্যমতে, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ কর্মীর ঘাটতি দেখা দেবে। এ শূন্যতা পূরণে দেশটি ইতোমধ্যে বিদেশি শ্রমিক আমদানির পথ সুগম করেছে। বাংলাদেশও এ খাতকে লক্ষ্য করে ২০৩০ সালের মধ্যে এক লাখ কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, নির্মাণ খাতে ৪০ হাজার, কলকারখানায় ২০ হাজার, কেয়ারগিভার ভিসায় ২০ হাজার এবং কৃষি ও গাড়ি সার্ভিসিং খাতে আরও ২০ হাজার কর্মী পাঠানো হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ পথ ধরা হচ্ছে স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) ভিসা।

Insaf World Banner 2

চ্যালেঞ্জের জায়গা কোথায়

তথ্যমতে, ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে জাপানে মাত্র দুই হাজার ৭৪০ জন কর্মী গেছে। অন্যদিকে, নেপাল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একাই ৬০ হাজারের বেশি কর্মী পাঠিয়েছে। পার্থক্যের মূল কারণ—ভাষা শিক্ষা, দক্ষ প্রশিক্ষক ও তথ্যের ঘাটতি।

বাংলাদেশে বিএমইটির আওতায় বর্তমানে ৩৩টি জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তবে দক্ষ শিক্ষক ও আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছেন না। ফলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি পাওয়া অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ভাষা ও সংস্কৃতিই সাফল্যের চাবিকাঠি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানে কাজ করতে হলে প্রথমে জাপানি ভাষা শিখে মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি জাপানি সংস্কৃতি ও কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো জরুরি। দক্ষ প্রশিক্ষক ও মানসম্মত প্রশিক্ষণের ঘাটতি কাটানো না গেলে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সরকারি উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে “জাপান সেল” গঠন করেছে, যারা শ্রমবাজার বিশ্লেষণ, তথ্য সংগ্রহ, ভাষা প্রশিক্ষণ ও জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগেও আবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে, যেখানে সরাসরি জাপানি শিক্ষকেরা প্রশিক্ষণ দেবেন।

কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি হলেও বাস্তবতা হলো—বাংলাদেশকে এখনো অনেকদূর যেতে হবে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও ভাষা শিক্ষার মান উন্নয়নে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল ছাড়া এই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :