ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা
- আপডেট সময় : ১২:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
- / 357
ও ইসরাইলের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বৃদ্ধি করেছে, যা ইসরাইলের ভূখণ্ডকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এর প্রেক্ষিতে ইসরাইলও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে সৈন্য বৃদ্ধি করেছে এবং কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে, আর তেহরান, বৈরুত ও গাজায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উদযাপন হয়েছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং উদযাপন
গত মঙ্গলবার থেকে ইরান ইসরাইলের উপর ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে শুরু করে। ইরানি সেনা দাবি করেছে যে তারা ইসরাইলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে বেশ কিছু সফলভাবে ইসরাইলি ভূখণ্ডে আঘাত হানে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও ক্ষতির ব্যাপারে তেমন কোনো বড় খবর আসেনি, ইরানের এই হামলার পর তেহরান, গাজা, এবং বৈরুতে উদযাপন শুরু হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, গাজার ফিলিস্তিনিরা এবং ইরানের জনসাধারণ “আল্লাহু আকবর” ধ্বনি তুলে মার্কিন-ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। ইরানিদের মধ্যে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (IRGC) জন্য সমর্থন প্রকাশ পাওয়া গেছে।

ইসরাইলের প্রতিশোধ এবং নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের এই হামলার জন্য কড়া প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইরানকে এই হামলার জন্য ফল ভুগতে হবে।” ইসরাইলের মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভাকে বলেন, “ইরান তাদের এই হামলা করে বড় ভুল করেছে এবং এর কড়া ফলাফল ভোগ করতে হবে।”
লেবাননে ইসরাইলি সামরিক অভিযান
ইসরাইল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের স্থল অভিযানের জন্য সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্স (IDF) জানিয়েছে, তারা হেজবুল্লাহর নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সীমিত সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে। লেবাননের সীমান্তবর্তী ২৫টি গ্রাম থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আইডিএফ।
ইরানের হুঁশিয়ারি এবং প্রতিশোধের পরিকল্পনা
ইরান ইসরাইলকে সতর্ক করেছে যে, ইসরাইল যদি তাদের উপর কোনো পাল্টা হামলা চালায়, তবে ইরান আরও শক্তিশালী প্রতিশোধমূলক হামলা চালাবে। ইরানের সামরিক বাহিনীর যুগ্ম প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি বলেছেন, “ইসরাইল যদি আমাদের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কাজ চালিয়ে যায়, তবে আমরা তাদের অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্য করে আরও শক্তিশালী হামলা করব।”
আরো খবর পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এবং প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন এবং মার্কিন সেনা সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনী ইরান থেকে ছোড়া ডজনখানেক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় পূর্ণ প্রস্তুতির কথা জানান।
উপসংহার
ইরান-ইসরাইলের মধ্যে চলমান এই সামরিক উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এবং ইরানের পাল্টা হুমকি পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে একটি দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন

















