বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
- আপডেট সময় : ১১:৪৯:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
- / 688
বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রসরমান প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আমাদের দেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং সরকারি কাঠামোর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। “ডিজিটাল বাংলাদেশ” ভিশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার ও বেসরকারি খাতের সম্মিলিত উদ্যোগে দেশকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে দেখা গেছে। তবে, এই অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জও এসেছে, যা কেবল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্যই নয়, বরং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং দক্ষতাও নিশ্চিত করতে হবে।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধি, স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা, ই-গভর্নেন্সের উন্নয়ন, এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবার প্রসার এই সক্ষমতার দৃষ্টান্ত। বিশেষ করে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং, এবং স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে ওঠা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অবস্থান করছে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যতই বাড়ছে, ততই সাইবার নিরাপত্তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টর থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত তথ্য পর্যন্ত, সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২৩ সালে দেশের কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার ঘটনা প্রমাণ করে যে, তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রয়োজন। এর সঙ্গে প্রয়োজন, প্রযুক্তিগত শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার। দেশের তরুণ প্রজন্মকে এই খাতে আরো প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে, যাতে তারা আধুনিক প্রযুক্তি যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ব্লকচেইন, এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর মাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিশাল। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সরকার নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এর মধ্যে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি খাত, এবং আর্থিক খাতে অগ্রগতি অন্যতম। স্মার্ট শহর নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে, যেখানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, স্মার্ট গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত নাগরিক সেবার ব্যবস্থা করা হবে। এইসব উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে সচেতন করে তোলাও জরুরি। ভবিষ্যতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে, যা শুধু আজকের চাহিদা নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্যও যথেষ্ট সক্ষম হবে।

















