বাজারে আওয়ামী সিন্ডিকেট অক্ষত: নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের কাছে সবজি এখন বিলাসী পণ্য
সরকারের নীরবতা এবং জনগণের বিপদ
- আপডেট সময় : ১০:০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪
- / 262
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই মাস পার হলেও বাজারের ভিন্ন দৃশ্যপটের বদল আসেনি। আওয়ামী লীগের অনুগত ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এখনও অটুট। একদিকে, পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, অন্যদিকে, মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব জনগণের অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা
বর্তমান সরকারের উপদেষ্টারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রাথমিক ভাষণে প্রধানউপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনগণের জীবনযাত্রা সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবে পণ্যের দাম আরও বেড়ে গেছে। তথাকথিত আওয়ামী সিন্ডিকেটের জন্য মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, এবং এটি জাতীয় সংসদে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রীর অসহায়ত্বের প্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের অবৈধ সিন্ডিকেট
দেশের বাজারে অবস্থানকারী বড় বড় কর্পোরেট হাউজগুলো—যেমন এস আলম, বসুন্ধরা, ও আব্দুল মোনেম—এদের সিন্ডিকেটের প্রভাব এখনো দৃঢ় রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কার্যক্রম কেবল সরকারের জন্য নয়, বরং জনগণের জীবনযাত্রার জন্যও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের অভাব
সরকার কিছু পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু সেই উদ্যোগগুলি যথেষ্ট নয়। ইতোমধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষ অত্যন্ত বিপাকে পড়েছে। সরকারের বাজার তদারকি অভিযানের বিষয়টি জনমনে আস্থা তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং কার্যক্রমগুলি কেবল লোক দেখানো মনে হচ্ছে।
ডিমের দাম বৃদ্ধি: সিন্ডিকেটের অবদান
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডিম দিবসের অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ডিমের দামের বৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে আতঙ্ক ও অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। সরকারের কর্তৃপক্ষরা সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সমন্বয়ের অভাব
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তারা বর্তমান ব্যবসায়ীদের সুবিধাভোগী হিসেবে কাজ করছেন, যা সরকারের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি করছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও আওয়ামী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অব্যাহত রয়েছে, যা বাজারকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে।
শেষ কথা
অতীতে জনতার গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী নিম্ন আয়ের মানুষ এবং শ্রমজীবীরা বর্তমান সরকারের অকার্যকরতার কারণে হতাশ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের এই অবস্থার পরিবর্তন কিভাবে হবে? ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এখন জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, এবং আশা করা যায় সরকার শীঘ্রই এই সংকটের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।












