বাংলাদেশ ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Insaf World Banner

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, ফ্যাসিস্ট সংগঠন: হাসনাত আবদুল্লাহ

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৮:০১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 73

ছবি: হাসনাত আব্দুল্লাহ

Insaf World Banner
"ইনসাফ বিশ্ব" পত্রিকার নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সংবাদটি শেয়ার করুন :

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংস্কারের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক শক্তিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

Insaf World Banner 1

তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, আগামী সংসদে যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। সেই জায়গা থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারের শক্তির পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবো।”

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের ফাতেমা কনভারসেশন হলে অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝালকাঠি জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাইনুল ইসলাম মান্না।

Insaf World Banner 2

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না। সচিবালয়ে ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড পর্যন্ত ভাগাভাগি চলছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনকে নিজেদের অনুকূলে নিতে ব্যস্ত। নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ নয়—তাদের কাজের কোনো নীতিমালা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা জেনেছি নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় দেড় কোটি মৃত ভোটারের নাম রয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনগুলোতে কবর থেকে উঠে এসে ভোট দিয়েছে—এমন খবরও আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি। রাজনৈতিক দলগুলো যদি একসাথে না আসে এবং ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।” নির্বাচন কমিশন একধরনের ব্যক্তি, ইচ্ছা সিদ্ধান্ত নেয়। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা নয়, নীতির মাধ্যমে চলতে হবে ইসিকে।

তিনি আরও বলেন, অন্তবর্তী কালীন সরকারকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোটের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হতে পারে সেটার দায়িত্ব আমাদের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে সমালোচনা করে এনসিপির এই নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন। তাদের যদি জনগণের সমর্থন থাকতো, তাহলে পালিয়ে যেতে হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হতো না। ডামি নির্বাচন আয়োজন করতেও হতো না।”

তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট শাসনের সময় ছাত্রশিবির, বিএনপি বা ছাত্রদলের কেউ গুম-খুন হলে সেটাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অনেক সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অতীতে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন। তারা তখন মানবতার কথা বলেননি।”

ভোট নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ভোট চাইবো সেইসব নাগরিকদের কাছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যারা অপরাধে জড়িত নয়, গুম-খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোকেই একসাথে কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এনসিপি যে অবস্থানে আছে, রাষ্ট্র বিনির্মাণে সবাইকে সেই চিন্তা-ভাবনায় আসতে হবে। আগামীর নির্বাচনে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফল হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান ও মাহমুদা মিতু, মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মূসা। সভায় জেলার চার উপজেলার এনসিপি নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
Insaf World Banner 1
Insaf World Banner 2

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, ফ্যাসিস্ট সংগঠন: হাসনাত আবদুল্লাহ

আপডেট সময় : ০৮:০১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদটি শেয়ার করুন :

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংস্কারের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক শক্তিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

Insaf World Banner 1

তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, আগামী সংসদে যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। সেই জায়গা থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারের শক্তির পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবো।”

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের ফাতেমা কনভারসেশন হলে অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝালকাঠি জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাইনুল ইসলাম মান্না।

Insaf World Banner 2

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না। সচিবালয়ে ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড পর্যন্ত ভাগাভাগি চলছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনকে নিজেদের অনুকূলে নিতে ব্যস্ত। নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ নয়—তাদের কাজের কোনো নীতিমালা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা জেনেছি নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় দেড় কোটি মৃত ভোটারের নাম রয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনগুলোতে কবর থেকে উঠে এসে ভোট দিয়েছে—এমন খবরও আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি। রাজনৈতিক দলগুলো যদি একসাথে না আসে এবং ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।” নির্বাচন কমিশন একধরনের ব্যক্তি, ইচ্ছা সিদ্ধান্ত নেয়। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা নয়, নীতির মাধ্যমে চলতে হবে ইসিকে।

তিনি আরও বলেন, অন্তবর্তী কালীন সরকারকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোটের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হতে পারে সেটার দায়িত্ব আমাদের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে সমালোচনা করে এনসিপির এই নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন। তাদের যদি জনগণের সমর্থন থাকতো, তাহলে পালিয়ে যেতে হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হতো না। ডামি নির্বাচন আয়োজন করতেও হতো না।”

তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট শাসনের সময় ছাত্রশিবির, বিএনপি বা ছাত্রদলের কেউ গুম-খুন হলে সেটাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অনেক সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অতীতে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন। তারা তখন মানবতার কথা বলেননি।”

ভোট নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ভোট চাইবো সেইসব নাগরিকদের কাছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যারা অপরাধে জড়িত নয়, গুম-খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোকেই একসাথে কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এনসিপি যে অবস্থানে আছে, রাষ্ট্র বিনির্মাণে সবাইকে সেই চিন্তা-ভাবনায় আসতে হবে। আগামীর নির্বাচনে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফল হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান ও মাহমুদা মিতু, মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মূসা। সভায় জেলার চার উপজেলার এনসিপি নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন :