বাংলাদেশ ১২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Insaf World Banner 5

অদৃশ্য প্রেম: এক অমর উপাখ্যান : পর্ব ১০

ইমরান হোসেন, সম্পাদক, ইনসাফ বিশ্ব
  • আপডেট সময় : ০৮:০০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / 24

ছবি : লেখক ইমরান হোসেন

Insaf World Banner 4
"ইনসাফ বিশ্ব" পত্রিকার নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সংবাদটি শেয়ার করুন :

(দশম পর্ব: ঐশী ইশারা এবং হৃদয়ের দ্বৈত অনুভূতি)

Insaf World Banner 1

লাইব্রেরির দরজা খোলার পর হৃদয় দিয়াকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেলেও দ্রুত নিজেকে সামলে নিলেন। দিয়ার ভিজে চোখ, বিধ্বস্ত চেহারা এবং তার এই নীরব আগমন—সবকিছুই হৃদয়ের ভেতরের ঐশী ইশারাটিকে যেন আরও জোরালো করল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হৃদয় এক অদ্ভুত অভ্যন্তরীণ বার্তা পাচ্ছিলেন। যখনই তিনি দিয়ার কল্যাণের জন্য মালিক আল্লাহ পাকের কাছে প্রার্থনা করতেন, তখনই তার মনে এক স্থির, কিন্তু শক্তিশালী অনুভূতি আসত: “তোমার এই আমানতকে রক্ষা করো। সময় এসেছে তোমার নীরব প্রেমের পরীক্ষা দেওয়ার।” হৃদয়ের এই ঐশী ইশারাটি ছিল এতই প্রবল যে, দিয়ার আগমন তার কাছে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা বলে মনে হলো না, বরং মালিকের নির্ধারিত একটি অধ্যায় বলে মনে হলো।

Insaf World Banner 2

দিয়া ঘরে প্রবেশ করার পরই হৃদয়ের সামনে মেঝেতে বসে অঝোরে কাঁদতে শুরু করল। দিয়ার কান্না তার পরিবার, সমাজ এবং পরিচিত জগৎ হারানোর প্রতীক ছিল। হৃদয় তখন দুটি তীব্র অনুভূতির দ্বন্দ্বে ভুগছিলেন:

১.মানবিক আবেগ: দিয়ার এই কষ্ট দেখে হৃদয়ের ভেতরে এক তীব্র মানবিক আকুলতা জাগল। তিনি চাইলেন তাকে শান্তনা দিতে, মাথায় হাত রাখতে, কিন্তু তার নৈতিক সীমারেখা তাকে আটকে রাখল।

২. ঐশী দায়িত্ব: হৃদয়ের ঐশী ইশারা তাকে স্মরণ করিয়ে দিল—দিয়া এখন কেবল একজন নারী নয়, সে আল্লাহর পথে আসা এক আশ্রয়প্রার্থী। তার প্রতি হৃদয়ের দায়িত্ব এখন সম্পূর্ণভাবে আধ্যাত্মিক ও পবিত্রতার

হৃদয় দ্রুত নিজের সংযম বজায় রাখলেন। তিনি একটি তোয়ালে এবং এক গ্লাস পানি দিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন, “দিয়া, তুমি এখন শান্ত হও। তোমার পথ এখন আরও কঠিন, কিন্তু মনে রেখো, সত্যের পথে যারা আসে, আল্লাহ পাক নিজেই তাদের অভিভাবক হন। তুমি আমার এই কক্ষকে তোমার আশ্রয় মনে করতে পারো। তবে সবকিছুর আগে তোমার উচিত মালিকের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়ে তার কাছে আশ্রয় চাওয়া।”

দিয়া চোখ তুলে হৃদয়ের দিকে তাকাল। সে হৃদয়ের চোখে দেখল কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই, আছে কেবল নিষ্কাম শ্রদ্ধা ও পবিত্র দায়িত্ববোধ। দিয়ার মনেও তখন মালিকের পক্ষ থেকে এক স্থির ইশারা এল—এই মানুষটিই তার নিরাপদ আশ্রয়, যিনি তার দেহ নয়, তার আত্মাকে সম্মান করেন।

সেই রাতে লাইব্রেরির কোণটি ছিল দিয়ার জন্য কেবল একটি আশ্রয় নয়, তা ছিল তাদের অমর প্রেমের গল্পের এক নতুন এবং পবিত্র যাত্রার সূচনা। হৃদয় জানতেন, তার নীরব প্রেম এখন এক জীবন্ত দায়িত্বে রূপ নিতে চলেছে।

চলবে…….

সংবাদটি শেয়ার করুন :
Insaf World Banner 1
Insaf World Banner 2

অদৃশ্য প্রেম: এক অমর উপাখ্যান : পর্ব ১০

আপডেট সময় : ০৮:০০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদটি শেয়ার করুন :

(দশম পর্ব: ঐশী ইশারা এবং হৃদয়ের দ্বৈত অনুভূতি)

Insaf World Banner 1

লাইব্রেরির দরজা খোলার পর হৃদয় দিয়াকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেলেও দ্রুত নিজেকে সামলে নিলেন। দিয়ার ভিজে চোখ, বিধ্বস্ত চেহারা এবং তার এই নীরব আগমন—সবকিছুই হৃদয়ের ভেতরের ঐশী ইশারাটিকে যেন আরও জোরালো করল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হৃদয় এক অদ্ভুত অভ্যন্তরীণ বার্তা পাচ্ছিলেন। যখনই তিনি দিয়ার কল্যাণের জন্য মালিক আল্লাহ পাকের কাছে প্রার্থনা করতেন, তখনই তার মনে এক স্থির, কিন্তু শক্তিশালী অনুভূতি আসত: “তোমার এই আমানতকে রক্ষা করো। সময় এসেছে তোমার নীরব প্রেমের পরীক্ষা দেওয়ার।” হৃদয়ের এই ঐশী ইশারাটি ছিল এতই প্রবল যে, দিয়ার আগমন তার কাছে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা বলে মনে হলো না, বরং মালিকের নির্ধারিত একটি অধ্যায় বলে মনে হলো।

Insaf World Banner 2

দিয়া ঘরে প্রবেশ করার পরই হৃদয়ের সামনে মেঝেতে বসে অঝোরে কাঁদতে শুরু করল। দিয়ার কান্না তার পরিবার, সমাজ এবং পরিচিত জগৎ হারানোর প্রতীক ছিল। হৃদয় তখন দুটি তীব্র অনুভূতির দ্বন্দ্বে ভুগছিলেন:

১.মানবিক আবেগ: দিয়ার এই কষ্ট দেখে হৃদয়ের ভেতরে এক তীব্র মানবিক আকুলতা জাগল। তিনি চাইলেন তাকে শান্তনা দিতে, মাথায় হাত রাখতে, কিন্তু তার নৈতিক সীমারেখা তাকে আটকে রাখল।

২. ঐশী দায়িত্ব: হৃদয়ের ঐশী ইশারা তাকে স্মরণ করিয়ে দিল—দিয়া এখন কেবল একজন নারী নয়, সে আল্লাহর পথে আসা এক আশ্রয়প্রার্থী। তার প্রতি হৃদয়ের দায়িত্ব এখন সম্পূর্ণভাবে আধ্যাত্মিক ও পবিত্রতার

হৃদয় দ্রুত নিজের সংযম বজায় রাখলেন। তিনি একটি তোয়ালে এবং এক গ্লাস পানি দিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন, “দিয়া, তুমি এখন শান্ত হও। তোমার পথ এখন আরও কঠিন, কিন্তু মনে রেখো, সত্যের পথে যারা আসে, আল্লাহ পাক নিজেই তাদের অভিভাবক হন। তুমি আমার এই কক্ষকে তোমার আশ্রয় মনে করতে পারো। তবে সবকিছুর আগে তোমার উচিত মালিকের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়ে তার কাছে আশ্রয় চাওয়া।”

দিয়া চোখ তুলে হৃদয়ের দিকে তাকাল। সে হৃদয়ের চোখে দেখল কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই, আছে কেবল নিষ্কাম শ্রদ্ধা ও পবিত্র দায়িত্ববোধ। দিয়ার মনেও তখন মালিকের পক্ষ থেকে এক স্থির ইশারা এল—এই মানুষটিই তার নিরাপদ আশ্রয়, যিনি তার দেহ নয়, তার আত্মাকে সম্মান করেন।

সেই রাতে লাইব্রেরির কোণটি ছিল দিয়ার জন্য কেবল একটি আশ্রয় নয়, তা ছিল তাদের অমর প্রেমের গল্পের এক নতুন এবং পবিত্র যাত্রার সূচনা। হৃদয় জানতেন, তার নীরব প্রেম এখন এক জীবন্ত দায়িত্বে রূপ নিতে চলেছে।

চলবে…….

সংবাদটি শেয়ার করুন :