বাংলাদেশ ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Insaf World Banner 5

অদৃশ্য প্রেম: এক অমর উপাখ্যান : পর্ব ১১

লেখক ইমরান হোসেন
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / 20

ছবি: লেখক ইমরান হোসেন

Insaf World Banner 4
"ইনসাফ বিশ্ব" পত্রিকার নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সংবাদটি শেয়ার করুন :

(একাদশ পর্ব: আশ্রয় ও পবিত্রতার চুক্তি)

Insaf World Banner 1

লাইব্রেরির সেই নির্জন সংরক্ষণ কক্ষটি এখন দিয়ার জন্য শুধু একটি আশ্রয় নয়, তা বিশ্বাস এবং নিরাপত্তার এক দুর্গে পরিণত হয়েছে। দিয়ার চোখেমুখে এখন আর বিতাড়িত হওয়ার কষ্ট নেই, আছে নতুন জীবনের আশা এবং ঐশী সিদ্ধান্তের প্রতি আত্মসমর্পণ। হৃদয় দিয়াকে দেখছিলেন, আর তার মনে হচ্ছিল—দিয়ার মুখ যেন এখন মালিকের আলোর স্পর্শে আরও উজ্জ্বল।

হৃদয় দিয়াকে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করে দিলেন। পরদিন সকালে, হৃদয় দিয়ার সামনে বসলেন। তাদের মধ্যে প্রথমবার হলো এক গভীর ও আনুষ্ঠানিক কথোপকথন, যা ছিল তাদের সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতের ভিত্তি।

Insaf World Banner 2

হৃদয় শান্ত কণ্ঠে শুরু করলেন, “দিয়া, তুমি যে ত্যাগ করেছো, তা তোমার সত্যের প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ। তুমি এখন আল্লাহ পাকের পথে আসা এক আমানত। আমি তোমার আশ্রয়দাতা হিসেবে তোমার নিরাপত্তা এবং পবিত্রতার জন্য সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি।”

দিয়া কৃতজ্ঞতাভরা চোখে হৃদয়ের দিকে তাকাল। সে দেখল, হৃদয়ের চোখে কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই, আছে কেবল পবিত্র দায়িত্ববোধ

দিয়া তখন কেঁদে ফেলে বলল, “হৃদয় ভাই, আপনি জানেন, আমি পরিবার হারিয়েছি, কিন্তু সত্যকে পেয়েছি। আমার মনে আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে—এই ভালোবাসা আমার নব-আবিষ্কৃত বিশ্বাসের মতোই পবিত্র। আমার এখন এই পৃথিবীতে কোনো সহায় নেই। আমার মহান মালিকের পরে আমি শুধু আপনাকেই আমার নির্ভরযোগ্য ছায়া মনে করি।”

এই কথা বলার সময় হৃদয়ের মনে সেই ঐশী ইশারাটি আরও জোরালো হলো। হৃদয় নিশ্চিত ছিলেন—তাদের এই সংযোগ কোনো জাগতিক খেলা নয়, এটি মালিকের একটি বিধান। হৃদয় তখন দিয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন, “দিয়া, তোমার এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আমার কাছে অমূল্য। আমি তোমাকে সম্মান করি, ভালোবাসি—তবে আমার এই ভালোবাসা তোমার দেহের প্রতি নয়, দিয়া। এটি তোমার আত্মার পবিত্রতা এবং আল্লাহ পাকের সৃষ্টির সৌন্দর্যের প্রতি। তোমার পরিস্থিতি এবং আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস আমাকে এক গুরুদায়িত্ব দিয়েছে।”

হৃদয় দিয়ার কাছে প্রস্তাব রাখলেন: “আমাদের এই পবিত্র সম্পর্ককে যদি সমাজ ও মালিকের কাছে বৈধ এবং সম্মানজনক করতে হয়, তবে তোমার প্রয়োজন একজন অভিভাবক। তোমার যদি কোনো আপত্তি না থাকে, তবে আমি তোমাকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। আমি তোমার এই বিপদের দিনে একজন রক্ষক হতে চাই।”

দিয়ার চোখে এবার আনন্দের অশ্রু। এটিই ছিল সেই ঐশী ইশারা, যা সে তার হৃদয়ে অনুভব করেছিল। সে সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেল, কারণ সে জানত—হৃদয় তার আত্মার পবিত্রতা রক্ষা করবেন এবং এই মিলন হবে তাদের নিষ্কাম প্রেমের চূড়ান্ত পরিণতি।

চলেব……

সংবাদটি শেয়ার করুন :
Insaf World Banner 1
Insaf World Banner 2

অদৃশ্য প্রেম: এক অমর উপাখ্যান : পর্ব ১১

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদটি শেয়ার করুন :

(একাদশ পর্ব: আশ্রয় ও পবিত্রতার চুক্তি)

Insaf World Banner 1

লাইব্রেরির সেই নির্জন সংরক্ষণ কক্ষটি এখন দিয়ার জন্য শুধু একটি আশ্রয় নয়, তা বিশ্বাস এবং নিরাপত্তার এক দুর্গে পরিণত হয়েছে। দিয়ার চোখেমুখে এখন আর বিতাড়িত হওয়ার কষ্ট নেই, আছে নতুন জীবনের আশা এবং ঐশী সিদ্ধান্তের প্রতি আত্মসমর্পণ। হৃদয় দিয়াকে দেখছিলেন, আর তার মনে হচ্ছিল—দিয়ার মুখ যেন এখন মালিকের আলোর স্পর্শে আরও উজ্জ্বল।

হৃদয় দিয়াকে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করে দিলেন। পরদিন সকালে, হৃদয় দিয়ার সামনে বসলেন। তাদের মধ্যে প্রথমবার হলো এক গভীর ও আনুষ্ঠানিক কথোপকথন, যা ছিল তাদের সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতের ভিত্তি।

Insaf World Banner 2

হৃদয় শান্ত কণ্ঠে শুরু করলেন, “দিয়া, তুমি যে ত্যাগ করেছো, তা তোমার সত্যের প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ। তুমি এখন আল্লাহ পাকের পথে আসা এক আমানত। আমি তোমার আশ্রয়দাতা হিসেবে তোমার নিরাপত্তা এবং পবিত্রতার জন্য সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি।”

দিয়া কৃতজ্ঞতাভরা চোখে হৃদয়ের দিকে তাকাল। সে দেখল, হৃদয়ের চোখে কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই, আছে কেবল পবিত্র দায়িত্ববোধ

দিয়া তখন কেঁদে ফেলে বলল, “হৃদয় ভাই, আপনি জানেন, আমি পরিবার হারিয়েছি, কিন্তু সত্যকে পেয়েছি। আমার মনে আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে—এই ভালোবাসা আমার নব-আবিষ্কৃত বিশ্বাসের মতোই পবিত্র। আমার এখন এই পৃথিবীতে কোনো সহায় নেই। আমার মহান মালিকের পরে আমি শুধু আপনাকেই আমার নির্ভরযোগ্য ছায়া মনে করি।”

এই কথা বলার সময় হৃদয়ের মনে সেই ঐশী ইশারাটি আরও জোরালো হলো। হৃদয় নিশ্চিত ছিলেন—তাদের এই সংযোগ কোনো জাগতিক খেলা নয়, এটি মালিকের একটি বিধান। হৃদয় তখন দিয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন, “দিয়া, তোমার এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আমার কাছে অমূল্য। আমি তোমাকে সম্মান করি, ভালোবাসি—তবে আমার এই ভালোবাসা তোমার দেহের প্রতি নয়, দিয়া। এটি তোমার আত্মার পবিত্রতা এবং আল্লাহ পাকের সৃষ্টির সৌন্দর্যের প্রতি। তোমার পরিস্থিতি এবং আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস আমাকে এক গুরুদায়িত্ব দিয়েছে।”

হৃদয় দিয়ার কাছে প্রস্তাব রাখলেন: “আমাদের এই পবিত্র সম্পর্ককে যদি সমাজ ও মালিকের কাছে বৈধ এবং সম্মানজনক করতে হয়, তবে তোমার প্রয়োজন একজন অভিভাবক। তোমার যদি কোনো আপত্তি না থাকে, তবে আমি তোমাকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। আমি তোমার এই বিপদের দিনে একজন রক্ষক হতে চাই।”

দিয়ার চোখে এবার আনন্দের অশ্রু। এটিই ছিল সেই ঐশী ইশারা, যা সে তার হৃদয়ে অনুভব করেছিল। সে সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেল, কারণ সে জানত—হৃদয় তার আত্মার পবিত্রতা রক্ষা করবেন এবং এই মিলন হবে তাদের নিষ্কাম প্রেমের চূড়ান্ত পরিণতি।

চলেব……

সংবাদটি শেয়ার করুন :