রমজানের জন্য ছয় নিত্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে তিনগুণ পর্যন্ত
- আপডেট সময় : ০৯:০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
- / 19
রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে ছয়টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। ডলার সংকট কমে যাওয়া এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুবিধাজনক নীতির কারণে এ বছর মসুর ডাল, ছোলা, খেজুরসহ প্রধান ভোগ্যপণ্যগুলোর আমদানি গত বছরের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রমজান মাসে যেসব পণ্যের চাহিদা তুঙ্গে থাকে—যেমন সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, মটর ডাল এবং খেজুর—সেগুলোর মজুত বাড়াতে আমদানিকারকরা পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা। এর আগে সরবরাহ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এসব পণ্যের জন্য খোলা ঋণপত্র বা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার পরিমাণ বিপুলভাবে বেড়েছে।
আমদানি চিত্র: পণ্যভেদে প্রবৃদ্ধি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে চলা ডলার সংকট এখন অনেকটাই কেটে যাওয়ায় আমদানির এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ছয়টি পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সয়াবিন তেল আমদানি বেড়েছে ৩৬ শতাংশ এবং চিনি আমদানি বেড়েছে ১১ শতাংশ। তবে প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে মটর ডাল এবং খেজুরে—মটর ডাল আমদানি বেড়েছে ২৯৪ শতাংশ এবং খেজুর আমদানি বেড়েছে ২৩১ শতাংশ। এছাড়া মসুর ডাল আমদানি ৮৭ শতাংশ এবং ছোলা আমদানি ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিশাল প্রবৃদ্ধি রমজানে ভোক্তাদের জন্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এলসি খোলা ও ডলারের জোগান
রমজানে তেলের চাহিদা সবসময় বেশি থাকায় শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক গ্রুপগুলো সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসেই বিপুল পরিমাণ তেল ও চিনির জন্য এলসি খুলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে যথাক্রমে ৬.২৯ বিলিয়ন ডলার ও ৫.৬৪ বিলিয়ন ডলারের মোট এলসি খোলা হয়েছে।
-
সয়াবিন তেল: গত বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪ টনের এলসি খোলা হলেও এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৫ টন।
-
চিনি: গত বছরের ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৬ টনের বিপরীতে এবার এলসি খোলা হয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭২ টনের।
তাছাড়া, ডাল (মসুর ডাল ও মটর ডাল) আমদানির এলসি ২৬ হাজার ৯১২ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার ৩৫৫ টন। ছোলার এলসি ৪২ হাজার ৮৯১ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪ হাজার ৫১৬ টন।
আমদানিকারকরা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে ডলারের জোগান ভালো থাকায় এবং এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিনের বাধ্যবাধকতা শিথিল করায় এই বিপুল পরিমাণ আমদানি সম্ভব হয়েছে। রমজানের সময় ভোগ্যপণ্য আমদানি যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি মার্জিনে ছাড়ের সুবিধা দিয়েছে। তারা আশা করছেন, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেও এই আমদানির ধারা অব্যাহত থাকবে এবং রোজা শুরু হওয়ার এক মাস আগপর্যন্ত বাকি পণ্য দেশে আসতে থাকবে।













