ভারতীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান
কাশ্মিরের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানের সমর্থন পুনর্ব্য
- আপডেট সময় : ০৭:২১:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
- / 164
ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মিরের স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ কাশ্মিরি জনগণের প্রতি তাদের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা জানান, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের আওতায় কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দ্য ডন জানায়
পাকিস্তানের দুই নেতা কাশ্মিরের জনগণের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ভারতীয় বাহিনীর নির্যাতনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করেন এবং জাতিসংঘের রেজুলেশন কার্যকর করার আহ্বান জানান।


রোববার (২৭ অক্টোবর) পালিত ‘কাশ্মির ব্ল্যাক ডে’
উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, “ভারতের দখলে থাকা জম্মু ও কাশ্মিরে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে এবং কাশ্মিরিদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে ভারতকে চাপ দিতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান কাশ্মিরি ভাই-বোনদের পাশে থাকবে যতক্ষণ না তারা তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জন করেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন
দিনটি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয়। কারণ এদিনই ভারত তার সৈন্য পাঠিয়ে জম্মু ও কাশ্মির দখল করে। কয়েক দশক ধরে ভারত কাশ্মিরকে বিশ্বের অন্যতম সামরিকায়িত অঞ্চলে পরিণত করেছে এবং হাজার হাজার নিরীহ কাশ্মিরিকে হত্যা করেছে। বৈধ কাশ্মিরি নেতাদের বন্দি করে এবং স্থানীয় মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বারবার একটি নিরপেক্ষ গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানালেও ভারত এই রেজুলেশনগুলোকে অমান্য করে চলেছে।

কাশ্মিরের স্বাধীনতার প্রতি
পাকিস্তানের অটল সমর্থনের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, “আমরা ভারতের নৃশংসতা নিন্দা জানাই এবং কাশ্মিরিদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। দীর্ঘস্থায়ী বিরোধে ইন্ধন দেওয়া উচিত নয়। মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী আমাদেরকে সেই শিক্ষাই দেয়।”
উল্লেখ্য, পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তান ও ভারত দু’দেশই কাশ্মিরকে তাদের অংশ দাবি করলেও, বর্তমানে তারা এর নির্দিষ্ট অংশের শাসন করে। কাশ্মির নিয়ে তাদের মধ্যে তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দুটি হয়েছে। এই বিরোধের শুরু হয় ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই।
১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের উপজাতীয় বাহিনী আক্রমণ চালালে কাশ্মিরের তৎকালীন মহারাজা হরি সিং ভারতের সাথে যোগদানের চুক্তি করেন এবং ভারতীয় সামরিক সহায়তা পান, যার ফলে শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। ১৯৪৮ সালে এই যুদ্ধ শেষ হলে কাশ্মির ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পরে ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের মাধ্যমে চীন আকসাই-চিন অংশটি দখল করে এবং ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান কাশ্মিরের ট্রান্স-কারাকোরাম অংশটি চীনের হাতে তুলে দেয়।
জওহরলাল নেহেরুর সময়ে
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী কাশ্মির বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছিল, যা ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত বাতিল করে। এর মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মিরকে লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মির নামে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়।


















