বাংলাদেশ ০১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Insaf World Banner 5

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বললেন—“সমাধান মিয়ানমারেই, দেরি নয় কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি”

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাত দফা প্রস্তাব

ইনসাফ বিশ্ব ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 124

ছবি: প্রধান উপদেষ্টা

Insaf World Banner 4
"ইনসাফ বিশ্ব" পত্রিকার নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সংবাদটি শেয়ার করুন :

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবিক সংকট নিয়ে বাংলাদেশ সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিউইয়র্কে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে বিশ্বের অন্তত ৭৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানও উপস্থিত ছিলেন।

Insaf World Banner 1

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেন।

Insaf World Banner 2

উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউনূসের সতর্ক বার্তা

ড. ইউনূস বলেন, গণহত্যা শুরুর আট বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা কমেনি, বরং তা আরও প্রকট হয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব এবং আন্তর্জাতিক তহবিলের ঘাটতি পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারেই, সমাধানও সেখানেই করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান সেনাবাহিনীর উপর চাপ প্রয়োগ করে নির্যাতন বন্ধ ও প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে।”—

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ৭ দফা প্রস্তাব

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টেকসই সমাধানের জন্য সাতটি সুস্পষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন:

১. রাখাইনের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন।

২. মিয়ানমার সরকার ও আরাকান সেনাবাহিনীর উপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করে সহিংসতা বন্ধ ও প্রত্যাবাসন শুরু করা।

৩. রাখাইনের স্থিতিশীলতার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

৪. রাখাইন সমাজ ও প্রশাসনে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে একীভূত করার জন্য আস্থা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া।

৫. যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দাতাদের অবদান একত্রিত করে পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করা।

৬. দায়বদ্ধতা নিশ্চিত ও পুনরুদ্ধারমূলক ন্যায়বিচার অনুসরণ করা।

৭. মাদক অর্থনীতি ভেঙে ফেলা এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করা।—

বাংলাদেশের অবস্থান

ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের সীমিত আর্থিক ও সামাজিক সামর্থ্যের কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। তাছাড়া রাখাইন হয়ে মাদক প্রবাহ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, রোহিঙ্গারা বারবার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা।—

আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান

সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ইউনূস বলেন, “বিশ্ব আর রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। আমাদের এখনই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”

সংবাদটি শেয়ার করুন :
Insaf World Banner 1
Insaf World Banner 2

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বললেন—“সমাধান মিয়ানমারেই, দেরি নয় কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি”

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাত দফা প্রস্তাব

আপডেট সময় : ০১:২২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদটি শেয়ার করুন :

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবিক সংকট নিয়ে বাংলাদেশ সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিউইয়র্কে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে বিশ্বের অন্তত ৭৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানও উপস্থিত ছিলেন।

Insaf World Banner 1

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেন।

Insaf World Banner 2

উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউনূসের সতর্ক বার্তা

ড. ইউনূস বলেন, গণহত্যা শুরুর আট বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা কমেনি, বরং তা আরও প্রকট হয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব এবং আন্তর্জাতিক তহবিলের ঘাটতি পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারেই, সমাধানও সেখানেই করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান সেনাবাহিনীর উপর চাপ প্রয়োগ করে নির্যাতন বন্ধ ও প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে।”—

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ৭ দফা প্রস্তাব

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টেকসই সমাধানের জন্য সাতটি সুস্পষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন:

১. রাখাইনের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন।

২. মিয়ানমার সরকার ও আরাকান সেনাবাহিনীর উপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করে সহিংসতা বন্ধ ও প্রত্যাবাসন শুরু করা।

৩. রাখাইনের স্থিতিশীলতার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

৪. রাখাইন সমাজ ও প্রশাসনে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে একীভূত করার জন্য আস্থা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া।

৫. যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দাতাদের অবদান একত্রিত করে পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করা।

৬. দায়বদ্ধতা নিশ্চিত ও পুনরুদ্ধারমূলক ন্যায়বিচার অনুসরণ করা।

৭. মাদক অর্থনীতি ভেঙে ফেলা এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করা।—

বাংলাদেশের অবস্থান

ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের সীমিত আর্থিক ও সামাজিক সামর্থ্যের কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। তাছাড়া রাখাইন হয়ে মাদক প্রবাহ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, রোহিঙ্গারা বারবার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা।—

আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান

সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ইউনূস বলেন, “বিশ্ব আর রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। আমাদের এখনই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”

সংবাদটি শেয়ার করুন :